সন্তান প্রসব করতে এসে ২৮ বছর বয়সী এক মহিলার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা ছড়ালো দুর্গাপুরের শোভাপুরে অবস্থিত একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বেনাচিতি মসজিদ মোহাল্লার বাসিন্দা ইরশাদ জাহান বয়স আনুমানিক ২৮ বছর গত ২০ তারিখে ভর্তি হন সন্তান প্রসব করার জন্য দুর্গাপুর শোভাপুরে অবস্থিত এই বেসরকারি হাসপাতালে। এবং ২১ তারিখ তার সন্তান প্রসব এর অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এরপরই তার ক্রমাগত শারীরিক অবনতি লক্ষ্য করা গেলে রোগীর পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়দের অভিযোগ ওঠে ভুল চিকিৎসার দিকে ।চিকিৎসার গাফিলতির দিকে আঙুল তুলে বারংবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণে চেষ্টা করেন কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এর কর্মকান্ডে তারা আশানুরূপ ফল পায়নি বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা । এদিকে ২৮ শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ শনিবার সন্ধ্যায় রোগীর মৃত্যু হলে পরিবারের লোকজন ক্ষোভে ফেটে পড়েন হাসপাতাল চত্বরে। গৃহবধূর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘটনাস্থলে বেনাচিতি মসজিদ মোহাল্লা থেকে রোগীর আত্মীয় পরিজনদের একটি বিশাল অংশ হাসপাতালের সামনে উপস্থিত হয়ে তাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করতে থাকলে ঘটনা স্থলে দুর্গাপুর থানার পুলিশ কমব্যাট ফোর্স ও মহিলা পুলিশ কর্মীদের নিয়ে উপস্থিত হন। ঘটনাস্থলে একটা সময়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের বচসা থেকে উত্তেজনার পারদ চরম আকার নেয়।মহিলা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গেও রোগীর পরিবারের মহিলাদের ও চরম বাগ বিতন্ডা ও উত্তেজনা লক্ষ্যনীয় ছিল।
মৃতার পরিবারের তরফে তার দিদি শাহানারা জাহান, বিউটি ও মৃতার দাদা ফিরোজ আলী প্রত্যেকেই দাবি করেন যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে দ্বিচারিতা করছেন তাদের বক্তব্য একবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের মেডিকেল গাফিলতি বা ভুলের কথা স্বীকার করলেও পরবর্তী সময়ে তারা সেই কথা অস্বীকারও করছেন। এমত অবস্থায় রোগীর পরিবার-পরিজনদের দাবি মৃতার তিন সন্তানের জন্য আগামী ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করার দাবী জানাতে থাকে পরিবারের সদস্যরা।
মৃতার পরিবারের লোকেরা আরো দাবি করেন প্রসবের অস্ত্রপচারের সময়ে ডাক্তার রোগিনীর মূত্রনালী বাদ দিয়ে দেন যার ফলস্বরূপ তাঁদের রুগীর মৃত্যু হয়েছে। এবিষয়ে পরিবারের মহিলা দের আরো অভিযোগ প্রসবের সময় বারংবার জানান হয় যে রুগীনির এটি তৃতীয় সন্তান প্রসব পক্রিয়া সেহেতু সিনিয়র ডাক্তার দিয়ে অস্ত্রপচারের দাবী ও অনুরোধ করলেও আদতে জুনিয়র ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসার অভিযোগ শোনা যায় মৃতার পরিবারের তরফে। মৃতা মহিলা বিগত ২১ তারিখ একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকরা উপস্থিত হয়ে রোগীর আত্মীয়দের বলেন যে আপনাদের অভিযোগ জমা দিলে রোগীর যাবতীয় মেডিকেল ডকুমেন্ট বাজেয়াপ্ত করে cmoh দপ্তরে পাঠানো হবে ও তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী এফআইআর করা হবে কিন্তু উত্তেজিত রোগীর আত্মীয়রা তাদের ক্ষোভ এর বহিঃপ্রকাশ করেন ও তারা এটাও জানান যে তারা মৃতদেহ নিয়ে তাদের বিক্ষোভ দেখাবেন এ বিষয়ে পুলিশ কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বারংবার বোঝানোর চেষ্টা করলে তারা ক্ষতিপূরণ ও ডাক্তারের লাইসেন্স বাতিলের দাবী করতে থাকেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে সুপর্ণা সেনগুপ্ত তার বক্তব্যে বলেন পেশেন্টের শারীরিক অবস্থা খুব ভালো ছিলোনা। পেসেন্ট ভর্তির সময় থেকেই বিভিন্ন জটিলতা নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে তার আগের মেডিকেল হিস্ট্রি তে তিনটি আবোশন হয়েছিল এছাড়া আই. ও. ডি ছিলো আর তাছাড়া উচ্চ ঝুকিপূর্ন প্রেগনেন্সির বিষয় ছিলো যার ফলে অস্ত্রোপচারের পরবর্তী সময়ে জটিলতা বাড়তে থাকে এবং অর্গান ফেলিওর হয়। হাসপাতাল চত্বরে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়।
0 মন্তব্যসমূহ